শিরোনাম

প্রচ্ছদ /   করোনার ১ম সফল ওষুধ তৈরি বাংলাদেশে যেদিন থেকে দেয়া হবে হাসপাতালগুলোতে

করোনার ১ম সফল ওষুধ তৈরি বাংলাদেশে যেদিন থেকে দেয়া হবে হাসপাতালগুলোতে

Avatar

শনিবার, মে ৯, ২০২০

প্রিন্ট করুন

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর ওষুধ রেমডেসিভির উৎপাদন সম্পন্ন করেছে দেশের খ্যাতনামা ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড।

উৎপাদনের সব প্রক্রিয়া শেষ করার পর আজ শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে বাজারজাতের প্রস্তুতি।এসকেএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মক’র্তা সিমিন হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আম’রা দেশবাসীকে এই সুখবর দিতে চাই যে বিশ্বে করোনার একমাত্র কার্যকর ওষুধ বলে স্বীকৃত জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদনের সব ধাপ আম’রা সম্পন্ন করেছি।’

করো’না রোগীদের চিকিৎসায় মার্কিন প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সেস কোম্পানির তৈরি এই ওষুধ সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। যু’ক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) গত সপ্তাহে করো’নার ওষুধ হিসেবে রেমডেসিভিরকে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। জা’পানের ওষুধ প্রশাসন ৭ মে থেকে ওষুধটি করো’না রোগীদের ওপর প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ জা’পান এর উৎপাদনে যাবে তা এখনো ঠিক হয়নি বলে সে দেশের একজন স্বাস্থ্য কর্মক’র্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

মা’র্কিন প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সেস ওষুধটি উৎপাদনের জন্য ভা’রত ও পা’কিস্তানের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলেও খবরে জানা গেছে।

এ অবস্থায় এসকেএফই বিশ্বে প্রথম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, যারা জেনেরিক (মূল/গোত্র) রেমডেসিভির উৎপাদন করতে সক্ষম হলো। এসকেএফের উৎপাদন করা রেমডেসিভিরের বাণিজ্যিক নাম ‘রেমিভির’।আড় এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারজাত শুরু করতে পারবে বলে জানিয়েছে এসকেএফ, ফোলে শুরু হবে বাংলাদেশের হাসাপাতাল গুলতে চিকিৎসা দেয়া এই ওষুধের মাধ্যমে।

সিমিন হোসেন বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন গত মা’র্চ মাসে ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদনের পরপরই আমাদের ফর্মুলেশন বিজ্ঞানীরা মা’র্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে রেমডেসিভির নিয়ে কাজ শুরু করেন। যেহেতু এটি একটি শিরায় দেওয়া ইনজেকশন, সে কারণে এর উৎপাদনে সূক্ষ্ম প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। দুই মাস ধরে এসকেএফ কর্মীদের নিরলস পরিশ্রমের ফলেই এত কম সময়ে এটা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। ওষুধের মূল উপাদান সরবরাহকারীদের সঙ্গে চুক্তি করে পর্যাপ্ত কাঁচামাল প্রাপ্যতা নিশ্চিত করেছি আম’রা।’

কোভিড-১৯ রোগের বি’রুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে রেমডেসিভির। গিলিয়েড-এর নিজস্ব পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই ওষুধ ব্যবহারে রোগীদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। মানুষের শিরায় ইনজেকশন হিসেবে এই ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। রোগের তীব্রতার ওপর এর ডোজ নির্ভর করে। গুরুতর অ’সুস্থ রোগীদের জন্য ৫ অথবা ১০ দিনের ডোজ প্রয়োজন হতে পারে।

রেমডেসিভির উৎপাদনের একচেটিয়া স্বত্ব রয়েছে গিলিয়েডের। তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন অনুযায়ী, জাতিসংঘ স্বীকৃত বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো এসব পেটেন্ট বা স্বত্ব অগ্রাহ্য করতে পারে। ফলে এসব দেশ সহনীয় মূল্যে ওষুধ উৎপাদন করতে পারে। তবে এই ওষুধটি বর্তমানে খোলা বাজারে দেওয়া হবে না। এটা দে করো’না চিকিৎসার জন্য সরকার অনুমোদিত হাসপাতাল বা ক্লিনিককে ওয়া হবে।

যু’ক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও আ’মেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশেস ডিজিজেসের পরিচালক অ্যান্থনি এস ফাউসি হোয়াইট হাউসে এক আলোচনায় বলেন, ‘করো’না থেকে দ্রুত সেরে ওঠার ক্ষেত্রে রেমডেসিভিরের ইতিবাচক প্রভাব পরিষ্কার। আর এই ওষুধ যেহেতু কাজ করছে বলে পরিষ্কার প্রমাণ মিলেছে, তখন তা দ্রুত মানুষকে জানানো নৈতিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে।’

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন