শিরোনাম

প্রচ্ছদ /   কিশোরগঞ্জে ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যরকম ঈদ আয়োজন

কিশোরগঞ্জে ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যরকম ঈদ আয়োজন

Avatar

শুক্রবার, জুলাই ১৬, ২০২১

প্রিন্ট করুন

অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সকলেই। কারো নেই বাড়তি কোন আয়ের উৎস, নেই কোন ব্যাংক ব্যালান্স। নিজের জমানো টাকা দিয়েই তারা সাহায্য করছে অসহায়দের। হ্যাঁ, কিশোরগঞ্জের কয়েকজন বালক-বালিকাদের এইরকমই একটি অন্যরকম আয়োজন করতে দেখা গেছে।

লকডাউনে বসে বেশিরভাগ মানুষই গৃহবন্দী। বিশেষ করে অনেকে তাদের কর্মস্থল হারানোর ফলে অসহায় হয়ে পড়েছেন৷ গরিব ও দুস্থ মানুষরা পড়েছেন চরম কষ্টে। করোনা রুখতে দিনের পর দিন দেয়া হচ্ছে লকডাউন। যাতে বেশিরভাগই আছেন বিপাকে। এই আবহে সরকারের পাশাপাশি দেশের সাধারণ জনগণরাও সাহায্য করছে একে অন্যকে। সেইরকমই একটি সংগঠন থেকে সাহায্য পাচ্ছে অনেক গরিব-দুস্থ মানুষেরা। তবে যাদের কাছ থেকে সাহায্য পাচ্ছেন। তারা সবে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এরকমই এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়েছেন কিশোরগঞ্জ শহরের বালক-বালিকারা। তাদের সকলেই কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তাদের সংগঠন শিশুস্বপ্ন ফাউন্ডেশন নিয়ে তাদের স্বপ্ন অনেক দূরবর্তী। এসম্পর্কে তাদের সংগঠনের অন্যতম সদস্য তাসিন বলেন, “আমরা এই ফাউন্ডেশন খোলার মুল উদ্দেশ্য হলো :
বাংলাদেশ সরকার থেকে অনেক ত্রাণ আসলেও যারা এই ত্রানের ন্যায্য দাবিদার তারা অনেকেই পায় না। তাছাড়া এই লক ডাউনে অনেক মানুষের কপালে ৩ বেলা খাবার জুটে না। অনেকেই আছে যারা মধ্যবিত্ত যারা তাদের অসহায়ত্যের কথা কাউকে বলতে পারে না নিজেদের লজ্জার কারণে। আমরা তাদেরও গোপনভাবে সাহায্য করতে চাই। এই ফাউন্ডেশন শুধু কয়েকদিনের না থাকবে সারাজীবন। এই ফাউন্ডেশনের পিছনে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে শ্রম দিব যতটুকুই পারি।”

অন্য আরেকজন সদস্য মৃত্তিক বলেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ্য উনাদের উপহার দেওয়া। আমরা সাহায্য করছি না। আমরা সকলে সকলের জন্য উপহার দিচ্ছি। এবং উনাদেরকেও বলেছি আপনারা এইটাকে সাহায্য হিসেবে না নিয়ে উপহার। হিসেবে গ্রহণ করুন।”

১৫ জুলাই, রোজ বৃহস্পতিবার তারা সকলের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে। তিন কেজি চাল, ১ কেজি পোলাও চাল, ২ কেজি আলু, চিনি, সেমাই, নুডলস ও দুধ তাদের পক্ষ থেকে বিতরণ করা হয়। তাদের ফান্ডে অনেকে সাহায্য করেছিল। একজন সদস্য থেকে জানা যায়, তাদের ফান্ডে দশ-বারো হাজার টাকার মতো জমা হয়েছিল।

সাহায্যপ্রাপ্ত তাসলিমা সহযোগিতা পেয়ে বলেন, “ওরা আমাদের সন্তানের মতো। কোন আয় নেয় তবুও নিজেদের জমানো টাকা থেকে আমাদের পুরো পরিবারকে এভাবে খুশি করেছে। ওরা শুধু কিশোরগঞ্জের না সারা দেশের গর্ব”

অভিভাবক মিজানুর রহমান বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েরা এরকম একটা সহযোগিতা সংগঠন নিজেরা প্রতিষ্ঠা করেছে এনিয়ে আমি খুব গর্বিত। আমি শুধু একজনের না এখানের প্রত্যেকের অভিভাবক হিসেবে গর্বিত।”

সংগঠনের অন্যতম সদস্যরা হলো, তাসিন, মৃত্তিক, মাহাদী, উদয়, সাবিত, পুনম, হৃদি, লিমন, ইফাজ তাসিন, নাহিয়ান, ফারাবি, মাহিন, সাকিব, অদ্রি, ফারদিন, হৃদি, রবিন, মুশফিকা, ইউশা প্রমুখ।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন