শিরোনাম

প্রচ্ছদ /   এই ৫টি কারণেই দ্রুত ক’রোনা কমবে বাংলাদেশে

এই ৫টি কারণেই দ্রুত ক’রোনা কমবে বাংলাদেশে

Avatar

বৃহস্পতিবার, মে ৭, ২০২০

প্রিন্ট করুন

বাংলাদেশে আশাবাদী মানুষের সংখ্যা কম নয় এবং সংশয়বাদীদের বি’রুদ্ধে আশাবাদীরা সবসময় আশার আলো ছড়িয়ে থাকেন। আশাবাদ নিয়েই বাংলাদেশ বেঁচে থাকে। বাংলাদেশের করো’না পরিণতি কি হবে এই নিয়ে গবেষকদের মাঝে বিতর্ক আছে।

কোন কোন গবেষক বলছেন বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভ’য়াবহ হবে, তেমনি অনেক গবেষকরা আশাবাদ ছড়াচ্ছেন, তারা বলছেন যে নানা কারণে বাংলাদেশে করো’না পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতি ঘটবে। মা’র্কিন যু’ক্তরাষ্ট্র, ইতালি, স্পেনের মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে হবেনা।

তবে মজার ব্যাপার হলো, সংশয়বাদী এবং আশাবাদী- দুই পক্ষের বিশেষজ্ঞরাই একটি বিষয়ে একমত যে, করো’নার ভবিষ্যত কি, বাংলাদেশে করো’নার প্রকোপ কেমন হবে, পরিস্থিতি কতদিন এমন থাকবে তা বোঝার জন্য যেরকম তথ্য-উপাত্ত দরকার তা মোটেই নেই। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যে পরীক্ষা হয়েছে, সেই পরীক্ষা দিয়ে পুরো দেশের পরিস্থিতি অনুমান করা সম্ভব নয়। কারণ বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত প্রতি ১০ লাখে মাত্র ৫৩২ জনের করো’না পরীক্ষা হয়েছে।

এটা এতই অ’প্রতুল যে, একটি সঠিক প্রক্ষেপণ তৈরি করার জন্য যথেষ্ট নয়। তবে কতগুলো আনুষঙ্গিক বিষয় এবং পারিপার্শ্বিকতার উপর ভিত্তি করে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে, বাংলাদেশে করো’না দ্রুতই কমে যাবে। যে সমস্ত কারণে তাঁরা এই আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তাঁর মধ্যে রয়েছে-

১. পরীক্ষার বাইরে থাকবে বিপুল মানুষ

করো’না সংক্রমণ হলেও একটি বিপুল সংখ্যক মানুষ করো’নার বাইরে থাকবে। কারণ বাংলাদেশ চাইলেও এক কোটি-দেড় কোটি মানুষের পরীক্ষা করতে পারবে না। কাজেই একটি বিপুল সংখ্যক মানুষ যখন পরীক্ষার বাইরে থাকবে, তখন আমাদের সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবে করো’নার ভ’য়াবহতা অনুভব করতে পারবো না। প্রায় ৯০ ভাগ আ’ক্রান্ত রোগীই মৃদু উপসর্গ নিয়ে থাকে এবং এটা সমাজ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য কোন আতঙ্ক তৈরি করেনা।

২. বৃষ্টি এবং উ’ত্তাপ ইস্যু

কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে, অন্যান্য ভাই’রাস যেহেতু বৃষ্টিতে কাবু হয়ে যায় এবং প্রচণ্ড গরমে ভাই’রাস সক্রিয় থাকতে পারেনা, করো’নাভাই’রাসের ক্ষেত্রেও তেমনটি হবে। যদিও এটা একটি হাইপোথিসিস এবং এটা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোন বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা প্রমাণ নেই।

কিন্তু তারপরেও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে, বৃষ্টি এবং উ’ত্তাপ করো’না সংক্রমণ ঠেকাতে একটি ভূমিকা রাখবে। এই আশাবাদের উপর ভিত্তি করে তাঁরা মনে করছেন যে, যেহেতু বাংলাদেশে এখন বৃষ্টি হচ্ছে এবং গরম আবহাওয়া তৈরি হয়েছে- কাজেই করো’না খুব দ্রুত বিস্তৃত হতে পারবে না।

৩. পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস

আম’রা করো’না মোকাবেলার ক্ষেত্রে সামাজিক দুরত্ব তৈরি করতে পারিনি, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা আমাদের তেমন সফল হয়নি। কিন্তু আম’রা একটি বিষয়ে অনেক সচেতন হয়েছি। তা হলো পরিচ্ছন্নতা এবং মাস্ক পরা।

বাংলাদেশের প্রায় সব মানুষই এখন সাবান দিয়ে হাত ধোঁয়া বা মাস্ক পরে বাইরে যাওয়ার বিষয়টি রপ্ত করে ফেলেছে এবং এটা করো’না মোকাবেলার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বাংলাদেশে যে একটি বড় সংখ্যক মানুষ করো’নায় আ’ক্রান্ত হবে বা সামাজিক সংক্রমণ বিপুলভাবে ছড়িয়ে পড়বে বলে শ’ঙ্কা করা হচ্ছে সেটা হবেনা এই পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাসের কারণে।

৪. নিজে থেকেই সুস্থ হবেন অনেক মানুষ

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যেহেতু বাংলাদেশের একটি বিরাট অংশ মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে না এবং হাসপাতাল ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মাঝে আতঙ্ক আছে- সেজন্য কিছু কিছু মানুষ করো’না আ’ক্রান্ত হলেও মৃদু উপসর্গ নিয়ে বাসায় থাকবে এবং ১৪ থেকে ২১ দিনের মা’থায় সুস্থ হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন। এটা সাধারণ তথ্য, পরিসংখ্যানের ভেতর আসবে না, রোগী নিজেও তথ্যটি গো’পন করবেন। তথ্য গো’পনের একটি বড় কারণ হলো, বাংলাদেশে করো’না নিয়ে একটি সামাজিক ঘৃ’ণাবোধ তৈরি হয়েছে এবং সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই অনেক মানুষই করো’না উপসর্গ থাকলেও প্রকাশ করছেন না। কাজেই বাংলাদেশে যারা করো’না আ’ক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের একটি বড় অংশই হিসেবের বাইরে থেকে যাবে।

৫. মানুষের অদম্য প্রা’ণশক্তি

করো’না মোকাবেলার ক্ষেত্রে মানুষের প্রা’ণশক্তিকে একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে মনে করছেন মা’র্কিন যু’ক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন যে, আ’ক্রান্ত ব্যক্তির প্রচণ্ড প্রা’ণশক্তি তাঁকে বাঁচিয়ে আনতে পারে। বাংলাদেশের মানুষের অদম্য প্রা’ণশক্তি রয়েছে এবং যার কারণে মৃদু সংক্রমণ থেকে জটিল সংক্রমণেও মানুষ তাঁর প্রা’ণশক্তি দিয়ে তথ্য গো’পন করেও সুস্থ হয়ে উঠবে।

এর ফলে বাস্তবে বাংলাদেশে করো’নার কত সংক্রমণ হয়েছে, কত মানুষ আ’ক্রান্ত হয়েছে সেই তথ্য আম’রা পাবো না এবং একটি পরিস্থিতিতে এটাই আমাদের সহনীয় হয়ে উঠবে। যেমন বাংলাদেশে ডায়রিয়া সহনীয় হয়ে গেছে, ডেঙ্গু সহনীয় হয়ে গেছে, সড়ক দূর্ঘটনা সহনীয় হয়ে গেছে, তেমনি করো’নাও হয়তো এক সময় আমাদের সহ্যের আওতায় চলে আসবে। এটা নিয়ে আম’রা উদ্বিগ্ন বা আতঙ্ক হবোনা এবং দ্রুতই আম’রা স্বভাবিক জীবনে ফিরে আসবো।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন