শিরোনাম

প্রচ্ছদ /   ব্যাচেলরদের আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে ‘সুপার হোস্টেল বিডি’

ব্যাচেলরদের আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে ‘সুপার হোস্টেল বিডি’

Avatar

রবিবার, নভেম্বর ৩, ২০১৯

প্রিন্ট করুন

বাড়ির গেটেই টানানো সাইনবোর্ড ‘ব্যাচেলর ভাড়া দেওয়া হয় না’। এ চিত্র খুব স্বাভাবিক ঢাকায়। নারী অথবা পুরুষ। ঢাকায় ব্যাচেলরদের জন্য আবাসন বিড়ম্বনা নতুন নয়। ভুক্তভোগীরা তা বোঝেন।

পুরুষ ব্যাচেলরদের জন্য রাজধানীতে বাসা ভাড়া পাওয়া যেন যুদ্ধজয়ের মতো। যদিও মেলে তাতে নাগরিক সেবার নূ্যনতম মান বজায় থাকে না। পাশাপাশি মানসম্মত খাবার নেই। বরং একজন পাচক-পাচিকা, যাদের বুয়া, খালা অনেক নামেই ডাকা হয়। তাকে খুঁজে বের করতেও গলদঘর্ম হতে হয়। ঘর, কাপড় পরিস্কার, বাজার সদাইয়ের ঝক্কি তো আছেই।এদিকে রাজধানীতে নারী কর্মজীবীদের অবস্থা আরও করুণ। এখনও কর্মক্ষেত্রে নানা অসুবিধার বিরুদ্ধে লড়াই করা একজন সিঙ্গেল নারীর জন্য সুনিরাপত্তা সমৃদ্ধ স্বল্প খরচের আবাসন যেন স্বর্ণের পাথরবাটি।রাজধানী ঢাকায় ১০০ ব্যাচেলর হোস্টেলের ভাবনা নিয়ে ২০১৭ সাল থেকে কাজ শুরু করে চীনা বিনিয়োগে বাংলাদেশভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নিউএজ। ‘সুপার হোস্টেল’ নামে স্বল্পমূল্যে ব্যাচেলরদের জন্য ২৫টিরও বেশি সুবিধা প্রদানের হোস্টেল প্রকল্প নিয়ে প্রকল্পটির বাংলাদেশ প্রধান ও প্রতিষ্ঠানটির ডিজিএম (ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার) মো. রাসেল কবির বলেন, ‘আমাদের সমাজে ব্যাচেলরদের প্রতি একটি ধারণাগত ভুল কাজ করে। আমরা ওই ধারণা বদলাতে চেয়েছি।

অতিথি সেবাকে মুখ্য করে কম খরচে আমরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আবাসন, তিন বেলা খাবার, স্বাস্থ্যসম্মত পানি, পরীক্ষা করা খাবার, ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যের ওয়াইফাই, ২৪ ঘণ্টার সিসি ক্যামেরা, ব্যক্তিগত লকার, জিম, রিডিংরুম সুবিধাসহ ২৫ ধরনের সেবা দিচ্ছি। আমরা ব্যাচেলরদের মনে এই ধারণা বিশ্বাস করাতে সচেষ্ট যে, স্বল্পমূল্যে তাদের পক্ষে কোয়ালিটি সেবা পাওয়া সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘দেশের ছাত্রাবাসগুলোতে অধিক লাভের আশায় অমানবিক ভাড়া চাওয়া হয়, যা অনেকের সামর্থ্যের বাইরে। মেয়েদের আবাসনের অবস্থা আরও নাজুক। আগামী তিন বছরে আমরা সব মিলিয়ে ১০০ হোস্টেলের যে পরিকল্পনা করেছি, তাতে মাত্র এক শতাংশ ব্যাচেলরকে সেবাদান করা সম্ভব। আমরা বাজার বা মুনাফার দিকে না তাকিয়ে আগে সেবার মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করার চেষ্টা করছি। জানি, কাজ করলে স্বীকৃতি আসবে। বাজারও তৈরি হবে। মুনাফাও মিলবে।’তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি হিসাবে রাজধানীর জনসংখ্যা দেড় কোটিরও বেশি। এর মধ্যে অবিবাহিত চাকরিজীবী এবং শিক্ষার্থী অন্তত দশ লাখ। আর এ খাতটিকেই সেবা দেওয়ার বড় জায়গা বলে মনে হয়েছে আমাদের কাছে।’২০১৮ সালের জুলাই থেকে পুরোদমে চালু হওয়া সুপার হোস্টেলের বর্তমান শাখা ছয়টি। পাঁচটি ছেলেদের জন্য এবং একটি মেয়েদের।মিরপুর কমার্স কলেজের উল্টোদিকে ‘নিউইয়র্ক-৫’ নামে পরিচিত ছেলেদের সুপার হোস্টেলে একটু ঢুঁ মারা গেল। এর সুসজ্জিত লবিতে স্থাপিত বড় এলইডি টিভিতে সিনেমা উপভোগের সুযোগ রয়েছে। ছয়তলা এই ভবনটিতে এক ছাদের নিচে ১৫০ জন থাকার সুবিধা আছে। বর্তমানে পুরো হোস্টেলে থাকছেন ১০০ জন।

রাজশাহী থেকে আসা শাকিব আহমেদ বলেন, ‘আমি রাজশাহী থেকে এসেছি। দুই মাস ধরে আছি এখানে। আত্মীয়স্বজন নেই। এক সূত্রের মাধ্যমে হোস্টেলটির খোঁজ মেলে। ভেবেছি গালগল্প করছে, সাত হাজার টাকায় তিন বেলা খাওয়ানো, সারাক্ষণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ চলবে। এখন দেখছি পুরোটাই সত্যি। এক কথায় সত্যিই দারুণ এদের সেবার মান!’হোস্টেল সুপার হোসাইন কিবরিয়া বলেন, আমরা আমাদের সেবাপ্রাপ্তদের গ্রাহক না ভেবে সদস্য মনে করি। সেভাবে তাদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।

মেয়েদের হোস্টেলেও একই ধরনের সুবিধা বিদ্যমান। রয়েছে পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রত্যেক সদস্যের পরিচয়পত্র যাচাই করে নেওয়া হয়। বাড়ি ভাড়া নিতে গেলে যে ফরম প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়, তা এখানেও করা হয়।মিরপুর রূপনগরে মেয়েদের হোস্টেলটিও বেশ ছিমছাম। এখানের বাসিন্দা নাদিয়া মল্লিক রীমু বলেন, ‘প্রত্যেক নারীর জন্য এখানে সুবিধা নিশ্চিত করা হয়।

আমাদের এখানে এখন আইনজীবী সদস্য রয়েছেন। যার কাছ থেকে আমি নিজেও বই নিয়ে পড়ি। এখানে সবাই বন্ধুর মতো। কেউ কাউকে অযথা বিরক্ত করেন না। অথচ লবি রুমে সব সময় একটা উৎসব ভাব থাকে।’

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন