বেশ হাকডাক দিয়ে চলতি বছরের শুরুতে তিন বছর পর জাতীয় দলে ঢুকেছিলেন এনামুল হক বিজয়। ঘরোয়া ক্রিকেটে এতোটাই ভালো পারফরম্যান্স করেছিলেন যে তাকে সুযোগ না দিয়ে পারেননি নির্বাচকরা। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সব কিছুই ছিল ডানহাতি এ ওপেনারের পক্ষে। কারণ ওই সময়টাই এনামুল হক দুর্দান্ত, অসাধারণ। কিন্তু লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর পর এনামুল হাঁটলেন উল্টো পথে! ব্যাটে ছিল না। আউট হওয়ার ধরণ ছিল বাজে। সব মিলিয়ে পুরোনো ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী ছিলেন ২৫ বছর বয়সি এ ক্রিকেটার। চার ম্যাচে তার ইনিংসগুলো ছিল এরকম, ১৯, ৩৫, ১ ও শূন্য।
বাদ পড়ার পর আবার নিজেকে ফিরে পেলেন। ঘরোয়া ক্রিকেট আবারও দ্যুতি ছড়ালেন। বড় দৈর্ঘ্যর ক্রিকেট টুর্নামেন্ট বিসিএল, ওয়ানডে ফরম্যাটের টুর্নামেন্ট ঢাকা লিগে এনামুলকে পাওয়া গেল চিরচেনা ছন্দে। আবারও আস্থা অর্জন করলেন। আসন্ন আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের ৩১ জনের প্রাথমিক দলে রয়েছেন এনামুল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তাকে আবার দেখা যেতে পারে জাতীয় দলের জার্সিতে। বাদ পড়ার পর মাঝের সময়টায় নিজের ব্যাটিং নিয়ে কাজ করেছেন এনামুল। তার কন্ঠে বেশ আত্মবিশ্বাসী সুর,‘আসলে উন্নতির জায়গা সব সময় থাকে প্রতিটা ব্যাটসম্যানের জন্য।আমি সব সময় চেষ্টা করেছি নিজের প্রক্রিয়া ঠিক রাখার। যতটুকু ব্যাট করেছি অনেকে বুঝতে পারছে যে উন্নতি হচ্ছে। আমি চেষ্টা করছি আরও ভালো করার। প্রিমিয়ার লিগ খুব ভালো গেছে, ১৬ ম্যাচ খেলেছি (৭৪৪ রান) । প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলছি সেটা দীর্ঘ পরিসরে কাজে দেবে। আশা করছি সুযোগ পেলে নিজেকে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মেলে ধরব।’তবে সুযোগ পাওয়ার জন্য এনামুলকে পাড় হতে হবে অনেক পথ। জাতীয় দলের ক্যাম্পে তার পজিশনে রয়েছে সৌম্য সরকার, লিটন দাশ, মোহাম্মদ মিথুন, নাজমুল হোসেন শান্ত, ইমরুল কায়েস। আছেন আরেক তরুণ সাদমান ইসলামও। সবাইকে টপকে তামিমের সঙ্গী হিসেবে তাকে জায়গা পেতে হবে।
দলে ঢোকার এ প্রতিযোগীতায় কোনো ‘ভয়’ নেই এনামুলের।বরং এ প্রতিযোগিতাকে এনামুল দেখছেন ইতিবাচক দৃষ্টিতে,‘আসলে প্রতিযোগিতা সব সময় থাকা দরকার। প্রতিযোগিতা থাকলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। প্রতিযোগিতা থাকলে পারফরম্যান্স বের হয়ে আসবে। আমি চাই প্রতিযগিতা থাকুক। এরমধ্যে যে ভালো করবে চাইব সেই বাংলাদেশ দলে থাকুক।’ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ফুলঝুরি ছুটালেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কেন ব্যর্থ হন এনামুল। প্রশ্নটা সবারই। এনামুল অবশ্য উত্তরটা দিলেন সাদামাটা,‘ভাগ্য কিছু কিছু সময় সহায় হবে, কখনো হবে না। কিন্তু খেলোয়াড়রা ঘরোয়াতে ভালো করেই তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসবে। এছাড়া তো সুযোগ নেই।আন্তর্জাতিক প্রস্তুত হতে হবে ঘরোয়াতেই। রানের অভ্যাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দুই ম্যাচ ভালো যায়নি…বাংলাদেশ দলও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। আগামীতে পারব না তেমন না। চেষ্টা করব যে ভুলগুলো করেছি আন্তর্জাতিকে আবার সুযোগ পেলে তা শোধরে নেব।’মিরপুরে ক্রিকেটারদের ফিটনেস ক্যাম্প চলছে। ফিটনেস নিয়ে বরাবরের মতো সিরিয়াস এনামুল। টানা খেলার ওপর থাকায় ফিটনেস ক্যাম্পেও নিজের সর্বোচ্চটা দিচ্ছেন। তার বিশ্বাস যে প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সেই প্রক্রিয়ায় ঠিক থাকলে বাংলাদেশ আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দারুণ ফল পাবে।
সিটি২৪নিউজের ফেসবুক পেজে লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন