নিজেকে বেশ অভাগাই ভাবতে পারেন তামিম ইকবাল। একপ্রান্তে টিকে থাকেন তিনি, অন্যপ্রান্তে চলতে থাকে আসা-যাওয়ার মিছিল। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে এমন দৃশ্য কম দেখেননি দেশসেরা এ ওপেনার। শুধু নির্দিষ্ট ম্যাচে কেন, পুরো ক্যারিয়ারে তামিমের উদ্বোধনী সঙ্গীদেরও ঠিক একই হাল!আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তামিমের অভিষেক ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে ম্যাচে তামিমের উদ্বোধনী সঙ্গী ছিলেন শাহরিয়ার নাফীস। সেই থেকে ১২ বছরে আরও ১৪ জন সঙ্গী বদলে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে তামিমের সঙ্গে ইনিংস সূচনা করতে নামলেন ২৩ বছর বয়সী বাঁহাতি সাদমান ইসলাম অনিক।
বাংলাদেশের পক্ষে নিজের অভিষেকের পর থেকে একপ্রান্ত আগলে রেখে টানা এক যুগ ধরে খেলে যাচ্ছেন তামিম। কিন্তু তার সঙ্গে থিতু হতে পারেননি কেউই। সবচেয়ে বেশিদিন তামিমের সঙ্গী ছিলেন ইমরুল কায়েস। আসা-যাওয়ার মধ্যেই তামিমের সঙ্গে প্রায় ১০ বছর ধরে উদ্বোধনী জুট গড়ে যাচ্ছেন ইমরুল।
আর সবচেয়ে কম মাত্র ১ ইনিংসে তামিমের সঙ্গে ইনিংস সূচনা করেছেন মুশফিকুর রহীম। নিয়মিত ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিকীর ইনজুরির কারণে অনেকটা বাধ্য হয়েই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন মুশফিক। খেলেছিলেন তখনো পর্যন্ত নিজের ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৯৮ রানের ইনিংস।
সবমিলিয়ে আজকের আগপর্যন্ত তামিমের সঙ্গে ইনিংস সূচনা করার অভিজ্ঞতা হয়েছে জাভেদ ওমর বেলিম, মেহরাব হোসেন জুনিয়র, মোহাম্মদ আশরাফুল, ইমরুল কায়েস, নাজিমুদ্দিন, এনামুল হক বিজয়, শামসুর রহমান শুভ, নাঈম ইসলাম, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, জুনায়েদ সিদ্দিকী, মোহাম্মদ মিঠুন, জহুরুল ইসলাম এবং লিটন কুমার দাসের।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে তামিমের ১৬তম সঙ্গী হিসেবে আজ ইনিংস সূচনা করেছেন সাদমান ইসলাম অনিক। ব্যাটিং স্টান্স, ফ্রন্ট ফুট ডিফেন্স কিংবা হুক শটটা অবিকল তামিমের মতো করেই খেলেন তরুণ ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিক। প্রথমবারের মতো যখন নামলেন তামিমের সঙ্গে ব্যাটিং করতে তখন ক্ষণিকের জন্য বিভ্রান্তিই তৈরি হলো ‘দুই’ তামিমকে দেখে।
প্রথম দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে শতক হাঁকানো তামিম জানিয়েছেন হ্যামিল্টনের সেডন পার্কের এই উইকেটে অন্তত ৩৫০-৪০০ রান করা প্রয়োজন ছিল দলের। কিন্তু নিজেদের ব্যর্থতার কারণে শেষ পর্যন্ত সেটি সম্ভব হয়নি। ১২৮ বলে ১২৬ রানের ইনিংস খেলা টাইগার ওপেনার বলেছেন,
‘আমি মনে করি এটি অনেক ভালো একটি উইকেট ছিল। উইকেট সবুজাভ ছিলো, তবে খুব বেশি নয়। আমাদের আরও বেশি রান করা উচিৎ ছিল যা করেছি তার থেকে। দিন শেষে আমাদের নিজেদেরকেই দোষারোপ করতে হবে। আমার মতে আমরা যদি পুরো দিন ব্যাটিং করতে পারতাম, তাহলে ৩৫০ থেকে ৪০০ রানের মতো করতে পারতাম, সেক্ষেত্রে এটি একটি ভালো পুঁজি হতো।’
এদিন অন্যান্য ব্যাটসম্যানেরা ব্যর্থ হলেও নিজের পরিকল্পনা কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছিলেন তামিম। বিশেষ করে নিজের স্বভাবসিদ্ধ খেলাটি খেলাটা খেলতে পেরে বেশ তৃপ্ত তিনি। ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তামিম বলেছেন,
‘আমি শুধু দীর্ঘ সময় ব্যাট করতে চেয়েছি। আমার একটি স্বচ্ছ পরিকল্পনা ছিল। পরিকল্পনাটি হল সুযোগ পেলেই বল মেরে খেলবো। ভাগ্যক্রমে আমি শুরুতে কিছু বাউন্ডারি পেয়েছিলাম এবং আমি যেভাবে ব্যাটিং করতে পছন্দ করি সেভাবে করতে পেরেছি।’
সিটি২৪নিউজের ফেসবুক পেজে লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন