গুয়াতেমালার ভয়ঙ্কর ফুয়েগো আগ্নেয়গিরি থেকে বুধবার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সেখান থেকে অনবরত গলিত লাভা ও ছাই ভস্ম নির্গত হওয়ার কারণে নতুন করে অগ্ন্যুৎওয়াতের আশাঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে আগের ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ৯৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৯৭ জন। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। রোববারের অগ্ন্যুৎপাতে গুয়াতেমালার দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম ছাই ভস্মে ঢাকা পড়েছে।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে ন্যাশনাল ফরেনসিক সায়েন্স এজেন্সি জানায়, অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনায় নিহত ৯৯ জনের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। আগ্নেয়গিরির লাভায় শরীর পুড়ে যাওয়ায় নিহতদের শনাক্ত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মৃত ৯৯ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ২৮ জনের লাশ সনাক্ত করা গেছে। অস্থায়ী মর্গ এবং ছাইয়ে ঢাকা রাস্তার মধ্যে নিখোঁজদের মরিয়া হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন স্বজনরা।
আগ্নেয়গিরির লাভায় ভয়াবহ উত্তাপ এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে অভিযান স্থগিতের ঘোষণা দেয় ন্যাশনাল ডিজাস্টার এজেন্সি। লোকজনকেও উপদ্রুত এলাকা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আগ্নেয়গিরি থেকে গল গল করে বেরিয়ে আসছে জ্বলন্ত লাভা স্রোত। বেরিয়ে আসছে ছাই। লাভার স্রোত গড়িয়ে গিয়েছে অন্তত ৮ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত। গুয়াতেমালার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (কনরেড) জানিয়েছে, উত্তপ্ত লাভার একেকটি স্রোত গ্রামের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে ভিতরে থাকা লোকজনকে দগ্ধ করেছে। ছাইয়ের কারণে গুয়াতেমালা সিটির লা অরোরা বিমানবন্দর বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
আগ্নেয়গিরিটি থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে এসকিন্টলা শহরে একটি অস্থায়ী মর্গ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে নিখোঁজদের স্বজনদের ভিড়। প্রিয়জনকে মরিয়া হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন তারা। মর্গে ছেলেকে খুঁজতে এসেছেন ৪৬ বছর বয়সী ফ্রান্সিসকো কিচে।
ঝালাইয়ের কাজ করেন তিনি। সন্তানকে শনাক্ত করতে নিজের রক্তের নমুনা জমা দিয়েছেন ফ্রান্সিসকো। সন্তানের পরিণতি কী হয়েছে তা আগেই জানা হয়ে গেছে তার। পুত্র আর পুত্রবধূকে খুঁজতে পরিবারসহ এখানে এসেছেন তারা।
আগ্নেয়গিরির দক্ষিণ পার্শ্ববর্তী একটি নতুন অগ্ন্যুৎপাতে গরম গ্যাস এবং গলিত শিলা ওঠায় মঙ্গলবার উদ্ধারকাজ বন্ধ ছিল। অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনায় প্রায় ১৭ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ হাজার জনকে অন্যত্র চলে যেতে বলা হয়েছে।
অগ্ন্যুৎপাতের ফলে আকাশের তিন হাজার ৭৬৩ মিটার উঁচুতে ছাইমেঘ, উত্তপ্ত কাদামাটি ও পাথরকণা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তপ্ত কাদামাটির নিচ থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। পার্বত্য দক্ষিণাঞ্চলে উদ্ধার কার্যক্রম শুরুর পর মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে।
সিটি২৪নিউজের ফেসবুক পেজে লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন