পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ালেখা শেষ করে চাকরির পথ বেছে না নিয়ে উদ্যোক্তার পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই বই নিয়ে কাজ করার প্রবল আগ্রহ ছিল এমনকি দিনের বেশিরভাগ সময় কাটতো বই পড়ে, বইয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ লিখে সংরক্ষণ করার মাধ্যমে। পি ডি এফ বইয়ের বিভিন্ন অংশের স্ক্রিনশট এতো বেশি জমে গিয়েছিল যে, সংখ্যাটা প্রায় ১৫-২০ হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়। পড়ালেখা শেষ করার পর পাবনাতে ‘আলোকিত বই বিতান’ নামে একটা লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে প্রচুর পরিমাণ ইসলামীক বইয়ের সমাহার করা হয়, একই সাথে এটা অফলাইন এবং অনলাইনে ‘আলোকিত বই বিতান’ নামে উভয় জায়গাতেই বিপুল পরিমাণ সাড়া ফেলে।
কয়েক বছর লাইব্রেরী নিয়ে কাজ করার পর তার মনে হয় নিজেই একটা প্রকাশনী ওপেন করা দরকার তাহলে নিজের মনপুত বই বের করা সম্ভব হবে এবং সারাদেশে ব্যাপকভাবে বই ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে ইন শা আল্লাহ, সেই চিন্তা থেকেই ২০২০ সালে ঢাকার বাংলাবাজারে ‘আলোকিত প্রকাশনী’ প্রতিষ্ঠা করেন। যেখানে শুধুমাত্র অথেনটিক ইসলামীক বইগুলো পাবলিশ হচ্ছে।
নয়ন আহমেদের ‘আলোকিত প্রকাশনী’ দুইটা বিষয় মাথায় রেখে কাজ করছে-
১- বইয়ের কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু যেন মানুষের জন্য খুবই উপকারী হয় আর সেই কারণেই এই প্রকাশনীর প্রায় সবগুলো বই মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় বড় স্কলারদের দিয়ে লিখিত নাহয় অনুদিত আর নয়ত সম্পাদিত যেন মানুষের কাছে ভুল ইনফরমেশন না যায়। মানুষের কাছে যে বার্তা যাবে তা যেন তাদের জন্য উপকারী হয়।
২- বইয়ের সৌন্দর্য যেন খুবই দৃষ্টিনন্দন হয়। বইয়ের বিষয়বস্তুর পাশাপাশি সৌন্দর্যের ব্যাপারটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বইয়ের প্রচ্ছদ, বইয়ের বাইন্ডিং, বইয়ের কাগজের মান সুন্দর না হলে সেই বইয়ের প্রতি এমনিতেই পাঠকদের আকর্ষণ কমে যাবে, এতে করে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বইও পাঠকদের বাসা পর্যন্তই হয়ত পৌছে না, এই বিষয়টাকে মাথায় রেখেই তার প্রকাশনী বইয়ের সৌন্দর্যের দিকে আলাদা মনোযোগ দিয়েছে যা তাদের বই দেখলেই যে কোনো পাঠকের কাছে পরিস্কার হয়ে যাবে।
২০২০ সালে ‘আলোকিত প্রকাশনী’ প্রতিষ্ঠার পর মাত্র এক বছর পার হতে না হতেই তার প্রকাশনী সারাদেশের মানুষের কাছে বেশ পরিচিত মা শা আল্লাহ এমনকি তাদের প্রকাশতি বইগুলো জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেল ‘এনটিভি’তে আপনার জিজ্ঞাসা অনুষ্ঠানে কয়েকবার পরিচিতি দেওয়া হয়েছে যেনো বইগুলোর মাধ্যমে দেশের মানুষ উপকৃত হতে পারেন।
নয়ন আহমেদের স্বপ্ন তার প্রকাশনী সারাদেশের মানুষের হাতের নাগালে পৌছে যাবে, ধর্মীয় ব্যাপারে মানুষের যেই এত এত কুসংস্কার ও অজানা সেই জায়গায় তার প্রকাশনী ভূমিকা রাখবে। অনলাইন এবং অফলাইনের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষের কাছে বই পৌঁছে দিবেন। প্রকাশনীর পরিধি অনেক বড় হবে, সেখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
তিনি চাকরির পথ বেছে নিলে শুধু নিজের পরিবার নিয়ে হয়ত ভালো থাকতেন কিন্তু ব্যবসার পথ বেছে নিয়েছেন যেন নিজের পাশাপাশি অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন, আর এর সবকিছু শুধুমাত্র একটা কারণে সেটা হচ্ছে, তিনি জেনেছিলেন সৎ ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন শহীদদের মর্যাদা পাবেন আর সেই কারণেই তার এই ব্যবসার পথে নিরন্তর পথচলার শুরু।আমরা দু’আ করি তার এই পথচলা সহজ হোক, তার স্বপ্ন পুরন হোক, এমন উদ্যোক্তাদের সফলতা মানে সত্যিকারভাবে দেশের সফলতা, দেশের মানুষের সফলতা।
সিটি২৪নিউজের ফেসবুক পেজে লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন