সম্প্রতি বয়সের গণ্ডিতে বত্রিশ পেরিয়েছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা জন্মদিন পালন করেননি। করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারণে তিনিও সবার কাছ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রেখেছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও সাকিব জন্মদিন পালন করতেন কিনা এনিয়ে রয়েছে ঢের সংশয়। কারণ খুব একটা স্বস্তিতে নেই তিনি। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন রেখে দুই বছরের (এক বছরের স্থগিত) নির্বাসন নিয়ে ক্রিকেট থেকে দূরে আছেন সাকিব। তবে ক্রিকেট থেকে বাইরে থাকলেও প্রায়শই খবরের শিরোনাম হয়েছেন তিনি। সাকিবকে সম্প্রতি ফের লাইমলাইটে এনেছে ক্রিকইনফো।
সাকিব কেন সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার এর স্বপক্ষে কিছু যুক্তি ও সংখ্যাতত্ত্ব দেখানো হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। তাতে কিছুটা হলেও উচ্ছ্বাসিত হতে পারেন সাকিব ভক্তরা। চলুন দেখে নেওয়া যাক সাকিব কেন সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের কাতারে চলে এসেছেন:
ক্রিকেটের তিন সংস্করণে সাকিব বিশেষজ্ঞ একজন অলরাউন্ডার। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের ব্যাটিং গড় ৩৯.৪; বোলিংয়ে ৩১.১২। গত এক দশকে যা অলরাউন্ডারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই প্রজন্মের অলরাউন্ডারদের সঙ্গে তার ব্যবধান ৮.২৭! এই সময়ে সাকিবের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বেন স্টোকস। ইংলিশ অলরাউন্ডারের সঙ্গে তার গড় পার্থক্য ৩.৮৬। ২০০০ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত সাকিবের চেয়ে কেবল এগিয়ে আছেন জ্যাক ক্যালিস। যিনি অন্তত দুই হাজার রান ও এক শ উইকেট নিয়েছেন।
নিষেধাজ্ঞার কারণে কয়েক মাস ধরে মাঠের বাইরে আছেন সাকিব। তবু হিসেব করলে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের কাতারে থাকবেন সাকিব। তার চেয়ে ব্যাটিং-বোলিং গড়ে এগিয়ে আছেন কেবল চারজন। তারা হলেন টনি গ্রিগ (পার্থক্য ৮.২৩), ইয়ান বোথাম (৫.১৪, রিচার্ড হ্যাডলি (৪.৮৬), ক্রিস কেয়ার্নস (৪.১৩), এবং কপিল দেব (১.৪)।
কিন্তু ওয়ানডে পরিসংখ্যানে তাদের সবার চেয়ে এগিয়ে থাকবেন সাকিব। শুধু টেস্ট ক্রিকেটে গড়ে সাকিব পাঁচজনের চেয়ে পিছিয়ে আছেন। এই সংস্করণে বাংলাদেশি অলরাউন্ডারের এমনই এক কীর্তি আছে কেল দুজনের- ইমরান খান ও ইয়ান বোথামের। এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও দশ উইকেট নেওয়া তৃতীয় ক্রিকেটার সাকিব। তবে গত ৩০ বছরের মধ্যে সাকিবই (২০১৪-১৫ মৌসুমে) প্রথম এই কীর্ত গড়েন। তিনিই প্রথম ক্রিকেটার যিনি তিন একই সময়ে তিন সংস্করণের সেরা অলরাউন্ডার ছিলেন।
অলরাউন্ডার হিসেবে সাকিব কেন সেরাদের তালিকায় এর স্বপক্ষে কিছু রেকর্ড ও পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো:
টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে কম সময়ে তিন হাজার রান ও দুশো উইকেট নিয়েছেন সাকিব। এই কীর্তির জন্য সাকিব ম্যাচ খেলেছেন ৫৪টি; ইয়ান বোথামের চেয়ে একটি কম।
২০০৬ সালে অভিষেকের পর সাকিবের চেয়ে বেশি ম্যান অব দ্য ম্যাচ পেয়েছেন কেবল তিনজন খেলোয়াড়। তারা হলেন- ভারতের বিরাট কোহলি, দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং শ্রীলঙ্কার তিলেকরাত্নে দিলশান। এ পর্যন্ত ২১টি ম্যাচে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন সাকিব।
ইতিহাসের পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫ হাজার রান ও আড়াই শ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন সাকিব। তার আগে এই কীর্তি গড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস, শ্রীলঙ্কার সনাৎ জয়সুরিয়া এবং পাকিস্তানের আব্দুল রাজ্জাক ও শহিদ আফ্রিদি।
ক্রিকেটের তিন সংস্করণের প্রতিটিতেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তিনজন সংগ্রাহকদের একজন সাকিব। উইকেট শিকারের তালিকাতেও আছেন তিনি।
সিটি২৪নিউজের ফেসবুক পেজে লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন