শিরোনাম

প্রচ্ছদ /   চমক দিয়ে ১ম টেস্টে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ পেলেন যিনি

চমক দিয়ে ১ম টেস্টে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ পেলেন যিনি

Avatar

রবিবার, মার্চ ৩, ২০১৯

প্রিন্ট করুন

হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের কাছে ইনিংস এবং ৫২ রানে পরাজিত হয়েছে সফরকারী বাংলাদেশ। এদিন সৌম্য সরকার এবং অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে খেলা শুরু করা বাংলাদেশ থেমেছে ৪২৯ রানে। ফলে বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে কিউইরা।

তবে টাইগাররা হারলেও বীরোচিত দুটি ইনিংস উপহার দিতে সক্ষম হয়েছেন সৌম্য এবং রিয়াদ। ১৭১ বলে ১৪৯ রান করেছেন সৌম্য। যেখানে ইনিংসের প্রায় শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে ১৪৬ রান করেন রিয়াদ। আজ টেস্টটির চতুর্থ দিন ৩৯ এবং ১৫ রানে অপরাজিত থেকে ব্যাটিং করতে নেমেছিলেন সৌম্য এবং রিয়াদ। আর কিউইদের থেকে বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিলো ৩০৭ রানে।

খেলতে নেমে শুরু থেকেই আজ দারুণ ব্যাটিং করেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সৌম্য। ট্রেন্ট বোল্টের ৪৬ তম ওভারে তৃতীয় বলে চার মেরেছিলেন তিনি। এরপর একই ওভারের শেষ বলে বিশাল একটি ছয় হাঁকিয়ে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।

ট্রেন্ট বোল্টের ৫২তম ওভারের প্রথম বলেই ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে হাঁকান দারুণ একটি ছয় হাঁকান সৌম্য সরকার। এর ঠিক এক বল পরেই মিড অন অঞ্চল দিয়ে চার হাঁকান তিনি। হাফসেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর বেশ আগ্রাসী ভঙ্গীতেই খেলেছেন এই টাইগার ব্যাটসম্যান।

এরপর মাত্র ৯৪ বলে নিজের অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। এরই সাথে দেশের বাইরে দ্রুততম সেঞ্চুরি হাঁকানো বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের কাতারে উঠে আসেন সৌম্য। এর আগে সৌম্যর সমান বল খেলে সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তি রয়েছে ওপেনার তামিম ইকবালের। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডর বিপক্ষে লর্ডসে এই ইনিংস খেলেন তিনি।

এদিকে সৌম্যর পাশাপাশি মাহমুদুল্লাহও খেলছিলেন দারুণ। এই দুই ব্যাটসম্যানের ব্যাটে কোনও উইকেট না হারিয়েই লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছিলো বাংলাদেশ। বিরতির আগে তাঁরা জুটি গড়েছিলেন ১৮৪ রানের।

তবে বিরতির পর ৮৫ তম ওভারের পঞ্চম বলে দারুণ খেলতে থাকা সৌম্য সরকারকে সরাসরি বোল্ড করে কিউইদের পক্ষে ব্রেক থ্রু এনে দিতে সক্ষম হন কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। এর ফলে মাহমুদুল্লাহর সাথে তাঁর ২৩৫ রানের জুটির পরিসমাপ্তি ঘটে। আর ১৪৯ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে। সৌম্যর পর রিয়াদের সাথে ক্রিজে যোগ দিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস।

কিন্তু ৯০ তম ওভারে বোলিংয়ে এসে আবারও টাইগার শিবিরে আঘাত হানেন কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। ওভারের তৃতীয় বলটিতে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাসকে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি।

দলীয় ৩৭৯ রানের মাথায় লিটন ফিরে গেলে দ্রুত আউট হতে হয়েছে মেহেদি হাসান মিরাজকেও। নিল ওয়েগনারের ৯১তম ওভারের প্রথম বলটি লং লেগ অঞ্চল দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিত রাভালের হাতে ধরা পড়ে ১ রানে বিদায় নিতে হয়েছে তাঁকে।

দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও বাংলাদেশের আশার প্রদীপ হয়ে এখনও টিকে ছিলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে দলকে ৪০০ রানের কোটাও পার করান দলপতি।

কিন্তু চা পান বিরতির পর খেলতে নেমে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। টিম সাউদির করা ১০৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি ডিপ পয়েন্ট অঞ্চলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ট্রেন্ট বোল্টের তালুবন্দি হন তিনি। আর অধিনায়কের বিদায়ের পর শেষ উইকেট হিসেবে এবাদত হোসেনের উইকেটটি তুলে নিয়ে টাইগারদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন টিম সাউদি।

কিউইদের পক্ষে ১২৩ রানে ৫ উইকেট শিকার করেছেন পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। আর ৯৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন টিম সাউদি। এছাড়াও আরেক পেসার নিল ওয়েগনার পেয়েছেন ২টি উইকেট।

উল্লেখ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে গতকাল ৭১৫ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিলো নিউজিল্যান্ড। বিশাল এই পুঁজির পেছনে মূল কৃতিত্ব ছিল অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের। কেননা অপরাজিত ২০০ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেছেন তিনি।

তবে উইলিয়ামসন ছাড়াও ১৬১ এবং ১৩২ রানের ইনিংস এসেছে টম লাথাম ও জিত রাভালের ব্যাট থেকে। কিউইদের এই রানের জবাবে খেলতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিলো টাইগাররা।

এর আগে ম্যাচটির শুরুতে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে কিউই বোলারদের তোপে মাত্র ২৩৪ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিলো বাংলাদেশ । দলের পক্ষে শুধু তামিম ইকবাল ছাড়া আর কেউই ভালো খেলতে পারেননি। তামিম ১২৬ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেছিলেন। বাংলাদেশ শিবিরে ধ্বস নামানোর মূলে ছিলেন কিউই পেসার ওয়েগনার। মাত্র ৮৭ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি। অপরদিকে ৭৬ রানে ৩ উইকেট নেন টিম সাউদি।

ম্যান অব দ্যা ম্যাচঃ উইলিয়ামসন

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

নিউজিল্যান্ডঃ ৭১৫/৬ (১৬৩ ওভার) (প্রথম ইনিংস) (উইলিয়ামসন- ২০০*, লাথাম- ১৬১; মিরাজ- ২/১৯০, সৌম্য- ২/৩১)

বাংলাদেশঃ ২৭৪/১০ (৬০ ওভার) (প্রথম ইনিংস) (তামিম- ১২৬; ওয়েগনার- ৫/৪৭, সাউদি- ৩/৭৬)

বাংলাদেশঃ ৪২৯/১০ (১০৩ ওভার) (দ্বিতীয় ইনিংস) (সৌম্য-১৪৯, মাহমুদুল্লাহ- ১৪৬; বোল্ট- ৫/১২৩, ওয়েগনার- ২/১০৪)

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন