বিপিএলের বিগত আসরগুলোতে ঢাকার ফ্র্যাঞ্চাইজি মানেই যেন ছিল টাকার ছড়াছড়ি। অথচ ষষ্ঠ আসরের নিলামে ঢাকা ডায়নামাইটসই সবচেয়ে কম খরুচে। এদিক থেকে ‘উত্থান’ ঘটেছে কুমিল্লা অঞ্চলের প্রতিনিধিত্বকারী দলের। এবার সবচেয়ে বেশি খরুচে দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
আর তাতে দেখা যাচ্ছে, ষষ্ঠ বিপিএলের খেলোয়াড় কেনায় সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে একবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, আর সবচেয়ে কম অর্থ খরচ করেছে ঢাকা ডায়নামাইটস- তারাও জিতেছে একটি শিরোপা।শাহিদ আফ্রিদিকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স কিনেছে ২ লাখ ইউএস ডলার বা ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা যেখানে ঢাকা ডায়নামাইটস মোট খরচ ১ কোটি ৭ লাখ টাকা।
সিলেট এবং কুমিল্লার মধ্যকার আজকের ম্যাচটিতে দুই অজি তারকা ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নার এবং স্টিভ স্মিথের প্রতিই বেশি নজর ছিলো ক্রিকেট প্রেমিদের। কিন্তু তাঁদের কেউই নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। ওয়ার্নার ১৪ এবং স্মিথ ১৬ রান করে আউট হয়েছেন আজ। উল্টো তাঁদের পরিবর্তে পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে এসেছিলেন পাকিস্তানি তারকা অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি।
কেননা সিলেটের ছুঁড়ে দেয়া ১২৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামার পর যখন ৯৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিলো কুমিল্লা তখনই ত্রাণকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন আফ্রিদি। মাত্র ২৫ বলে ৩৯ রানের বিধ্বংসী একটি ইনিংস খেলার মাধ্যমে দলকে এক বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের দারুণ একটি জয় এনে দিয়েছেন তিনি। হাঁকিয়েছেন ২টি ছয় এবং ৫টি চার। অলোক কাপালির করা ২০তম ওভারের পঞ্চম বলটি সীমানা ছাড়া করে জয় নিশ্চিত করেছিলেন আফ্রিদি।
ফলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শুভ সূচনাই পেলো স্টিভ স্মিথের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।তবে আফ্রিদি জয়ের নায়ক হলেও পার্শ্বনায়ক ছিলেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। তাঁর ৩৪ বলে ৩৫ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসটি জয়ের ভিত গড়তে অনেকটাই সাহায্য করেছিলো। নিকোলাস পুরানের সরাসরি থ্রোতে রান আউট না হলে হয়তো দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়তেন তিনি।
কুমিল্লার ব্যাটসম্যানদের ওপর এদিন সবথেকে বেশি চাপ সৃষ্টি করতে পেরেছেন শুধুমাত্র নেপালি স্পিনার সন্দীপ লামিচানে এবং পেসার আল-আমিন হোসেন। ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৬ রান খরচায় ২টি উইকেট শিকার করেছেন লামিচানে। যেখানে আল-আমিন ৪ ওভারে ২৭ রানে নিয়েছেন সমান সংখ্যক উইকেট। এছাড়াও ১৯ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ ইরফান।
এর আগে ম্যাচটির শুরুতে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৮ উইকেটে ১২৭ রান সংগ্রহ করেছিলো ডেভিড ওয়ার্নারের সিলেট সিক্সার্স। সিলেটের ব্যাটসম্যানদের শুরু থেকেই চাপের মুখে রেখেছিলেন কুমিল্লার বোলাররা। দলীয় ৫৬ রানের মাথাতেই ৫টি উইকেট খুইয়ে বিপদে পড়েছিলো তারা। পাদপ্রদীপের আলোয় থাকায় সিলেট অধিনায়ক ওয়ার্নার মাত্র ১৪ রান করে আউট হয়েছেন তৌহিদ হৃদয়ের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে।
ব্যাটিং করতে নেমে একটি বিশাল ছক্কা হাঁকানো ছাড়া আর কিছু করতে পারেননি সাব্বির রহমানও। তবে সবথেকে ব্যতিক্রম ছিলেন উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান পুরান। অলোক কাপালির সাথে ৫৫ রানের জুটি গড়ে দলকে শতকের কোটা পার করানোর মূল ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। ২০ বলে ১৯ রান করে তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন কাপালি এছাড়াও তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে নামা আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাট থেকেও এসেছে ১৯ রান।
কুমিল্লার বোলারদের মধ্যে সবথেকে সফল ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মোহাম্মদ শহীদ এবং মেহেদি হাসান। এই তিন বোলারই নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। এছাড়াও শহীদ আফ্রিদি শিকার করেছেন ১টি উইকেট।
সিলেট সিক্সার্স একাদশঃ
ডেভিড ওয়ার্নার (অধিনায়ক), মোহাম্মদ ইরফান, নিকোলাস পুরান, সন্দীপ লামিচানে, অলোক কাপালি, লিটন দাস, সাব্বির রহমান, আল-আমিন হোসেন, তাসকিন আহমেদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, তৌহিদ হৃদয়।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স একাদশঃ
স্টিভ স্মিথ (অধিনায়ক), আনামুল হক বিজয়, ইমরুল কায়েস, তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, আবু হায়দার রনি, মোহাম্মদ শহীদ, মেহেদি হাসান, এভিন লুইস, শোয়েব মালিক, শহীদ আফ্রিদি।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
সিলেট সিক্সার্সঃ ১২৭/৮ (২০ ওভার) (পুরান- ৪১, কাপালি-১৯) (সাইফুদ্দিন- ২/১৩, শহীদ- ২/২২)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সঃ ১৩০/৬ (১৯.৫ ওভার) (আফ্রিদি- ৩৯*, তামিম- ৩৫) (লামিচানে- ২/১৬, আল-আমিন-২/২৭)
টসঃ সিলেট (বোলিং)
সিটি২৪নিউজের ফেসবুক পেজে লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন