বিপিএলে রাজশাহী কিংসের দ্বিতীয় ম্যাচেই একাদশে যখন দেখা যায় হোসেন আলী নাম, তখন তা দেখে অনেকেই ভ্রু কুঁচকিয়েছিল। কিন্ত বোলিং করতে এসেই যখন প্রায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল ছুড়ছে, তখন অবাক বিপিএল দর্শকরা।
তার পুরু নাম মোহাম্মদ হোসেন আলী। ১৯৯৮ সালে নরসিংদী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে খেলেননি তিনি। ২০১৬ সালে জাতীয় দলের নেট বোলার হিসেবে মিরপুরে আসেন। তখন তার বোলিং পছন্দ হয় প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের।
কোচ সুযোগ করে দেন জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ভাগ হয়ে খেলা অনুশীলন ম্যাচে। অথচ তখনো তিনি বিসিবি হাই-পারফরমেন্স (এইচপি) দল, প্রিমিয়ার লিগ,
জাতীয় দল, এমনি প্রথম বিভাগ ক্রিকেটও খেলেননি। আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতোই যেন জাতীয় দলের অনুশীলন ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন। সেদিন ৩ ওভার বল করে ২৩ রান দিলেওকোন উইকেট পায়নি হোসেন আলী।
এরপরেই সুযোগ মেলে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ (ডিপিএল) খেলার। এই লিগে গাজি ক্রিকেটার্সের হয়ে ১০ ইনিংসে বোলিং করে ১০ উইকেট শিকার করেন। উইকেট তেমন বেশি না হলেও ইকোনমি রেট খুব ভালো, মাত্র ৪.৮২। সেরা বোলিং ফিগার ২১ রানে ২ উইকেট।
তারপর চট্টগ্রাম বিভাগের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। ৪ ম্যাচে ৭ ইনিংসে ৫৪.৫ ওভার বল করে ৪.১৭ ইকোনমি রেটে ৭ উইকেট শিকার করেন। ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগার ৭১ রানে ৩ উইকেট।
এবার সুযোগ পেলেন বিপিএলে রাজশাহী কিংস দলে। বিপিএলের নিজের প্রথম ওভারেই দেন ১৮ রান। হয়তবা প্রথমবারের মতো এত দর্শকের সামনে এত বড় ক্রিকেট আসরে খেলার চাপ নিতে পারেননি কিংবা অভিজ্ঞতার অভাব ছিলো তাই উইকেট এবং ব্যাটসম্যান বুঝে ভালো লাইন লেংথে বল
করতে পারেনি। শেষপর্যন্ত ৩ ওভার বল করে ১২ ইকোনমি রেটে ৩৬ রান দিয়ে কোনো উইকেট না পেলেও গতি, বাউন্স এবং আউটসুইংয়ে মুগ্ধ করেছে সবাইকে। নিয়মিত গতি ছিলো ১৪০ কিলোমিটারের আশেপাশে এবং সর্বোচ্চ গতি ছিলো ১৪১ কিলোমিটার।
বয়স মাত্র ১৯, অনেক সময় আছে। তাই কঠোর পরিশ্রম করে লাইন লেংথ এবং বোলিং বৈচিত্রে উন্নতি করতে হবে হোসেন আলীকে।বিসিবিরও উচিৎ এরকম সম্ভাবনাময় পেসারকে প্রয়োজনীয় সবরকম সাপোর্ট দেয়া। তাহলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ পেতে পারে একজন দুর্দান্ত পেস বোলার।
সিটি২৪নিউজের ফেসবুক পেজে লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন