শিরোনাম

প্রচ্ছদ /   এই পাঁচটি পরিকল্পনাই বাংলাদেশকে মুক্ত করতে পারেঃ গবেষণা

এই পাঁচটি পরিকল্পনাই বাংলাদেশকে মুক্ত করতে পারেঃ গবেষণা

Avatar

মঙ্গলবার, জুন ২, ২০২০

প্রিন্ট করুন

বাংলাদেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধলক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা সাতশো ছাড়িয়েছে। আজ বাংলাদেশে নতুন রেকর্ড স্থাপিত হয়েছে।

কিন্তু এসমস্ত তথ্যের থেকে এখনই কিছু জরুরী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা মনে করছেন যে, সামনে আরো ভয়াবহ সময় অপেক্ষা করছে এবং এখনই আমাদের কতগুলো প্রশ্নের উত্তর প্রয়োজন এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়েই আমাদের করোনা মোকাবেলার কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে হবে। নাহলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে, আমাদের শুধু হাহুতাশই করতে হবে। বাংলাদেশে এখন করোনার যে পরিস্থিতি তাতে পাঁচটি কর্মপরিকল্পনা সুনির্দিষ্টভাবে গ্রহণ করতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৈজ্ঞানিক প্রক্ষেপণ দরকার

বাংলাদেশে বর্তমানের বাস্তবতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক প্রক্ষেপণ বা প্রজেকশন দরকার। কারণ সেই অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে, সেই অনুযায়ী হাসপাতাল ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে এবং দ্রুতই এসব করতে হবে, মনে রাখতে হবে আমাদের হাতে সময় নেই। করোনা সংক্রমণের ব্যাপারে প্রথম যে প্রজেকশনটি করা হয়েছিল, তা করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৮ জন বিশেষজ্ঞদের দিয়ে প্রক্ষেপণে বলা হয়েছিল যে, পঞ্চাশ হাজার থেকে ১ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশে তাঁর থেকে বহু বেশি সংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হবে। কাজেই এখনই প্রকৃত বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক প্রজেকশন
তৈরি করা দরকার।

চিকিৎসার সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি

করোনার চিকিৎসা নিয়ে নানারকম পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে। কেউ বলছেন যে, করোনা চিকিৎসার জন্য প্লাজমা থেরাপি ভালো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সেটাকে নাকচ করে দিয়েছে। কেউ রেমিডিসিনের কথা বলছেন, সেটা নিয়েও নানারকম প্রশ্ন উঠেছে। মৃদু উপসর্গের মানুষদেরকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনা চিকিৎসার কোন ইউনিফর্ম প্রটোকল তৈরি করা হয়নি। যেটি বিশ্বের অনেক দেশই করেছে। আমরা জানি যে, করোনার জন্য এখন পর্যন্ত কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, কোন সুনির্দিষ্ট ওষুধ নেই, তবে প্রত্যেকটি দেশে একটি অভিন্ন চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। কিন্তু বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে যে, একেক হাসপাতালে একেক ধরণের পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এটা বিভ্রান্তিকর এবং যখন করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়বে তখন অপেক্ষাকৃত কম উন্নত হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দিতে হবে। এই জন্য এখন দ্রুত একটি অভিন্ন চিকিৎসা প্রটোকল তৈরি করা দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা এবং এই ব্যাপারে যে পরামর্শক কমিটি, সেই কমিটিকে অবিলম্বে কাজ শুরু করা দরকার বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞ নির্দিষ্টকরণ করা দরকার

বাংলাদেশে এখন সবাই বিশেষজ্ঞ হয়েছে। যারা গুগল সার্চ করতে পারে তারাই যেন করোনা বিশেষজ্ঞ। যার ফলে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন স্থানে বিভ্রান্তিকর নানারকম কথাবার্তা আসছে, নানারকম আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও নানারকম বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে করোনায় রোগ-প্রতিরোধ, করোনায় করণীয় এবং করোনা চিকিৎসা নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ নির্দিষ্টকরণ করা দরকার। পাশের দেশ ভারতেও যার-তার পক্ষে করোনা নিয়ে কথা বলা বা করোনা নিয়ে ভবিষ্যৎবানী বা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দেওয়া সম্ভব না। শুধুমাত্র বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ যারা দিতে সক্ষম তাঁদেরকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখন মোটামুটি সবাই বিশেষজ্ঞ। এই প্রবণতা বন্ধ করতে হবে, বিভ্রান্তি বন্ধ করতে হবে। এখন ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদেরকে কাজ করতে হবে এবং এইজন্য যারা সত্যিকারে করোনা নিয়ে কাজ করতে পারেন বা মতামত দেওয়ার যোগ্যতা রাখেন তাঁদেরকে দিয়েই মতামত দিতে হবে, যাতে জনগণের মাঝে কোন বিভ্রান্তি না ছড়ায়।

রোগী ব্যবস্থাপনা

এখন বাংলাদেশে অর্ধলক্ষ রোগী শনাক্ত হয়ে গেছে এবং হাসপাতালগুলোতে মুমূর্ষু রোগীরা যাবেই। কাজেই কিভাবে কারা হাসপাতালে যাবে, কারা বাসায় চিকিৎসা নিবে, কারা আইসোলেশনে থাকবে এই ব্যাপারে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

*কার বাইরের চিকিৎসা

বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোটাই ঢাকাকেন্দ্রিক এবং ঢাকার বাইরে খুব একটি চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। এখন করোনা সংক্রমণ যখন দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে, ফলে এই ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এখন দোষারোপের সময় নয়, এখন একে অন্যকে দায়ী করারও সময় নয়। বাংলাদেশের এখন যে প্ররিস্থিতি তাতে এখন সরকার একটি সমন্বিত, সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা এবং এই এই পাঁচটি প্রশ্নের দ্রুত উত্তর এবং এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।

সূত্রঃ গোনিউজ

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন